তলপেটের চর্বি বা ভুঁড়ি কমানোর সহজ উপায় জানুন

আমরা অনকেই পেটের চর্বি নিয়ে অনেক চিনতাই থাকি বেশির ভাগ মানুষই পছন্দ করেন না। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যাদের পেটে অতিরিক্ত চর্বি বা ভুরি থাকে তাদের মধ্যে ডায়াবেটিস হার্ট অ্যাটাক সহ বিভিন্ন ধরনের রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি আছে।

অনেক গবেষণার ওপর ভিত্তি করে আজকে আমরা জানবো কিভাবে আমরা পেটের চর্বি কমাতে পারি এবং কিভাবে আমরা পেটের চর্বি জমা হওয়া বন্ধ করতে পারি। পেটে চর্বি হওয়া কিভাবে বন্ধ করবেন চলুন জেনে নেয়া যাক।

যেসব খাবারে ট্রান্সফ্যাট থাকে সেসব খাবার বর্জন করতে হবে। যেমন - কেক কুকিজ ডালডা জাতীয় খাবার অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার ভাজাপোড়া ইত্যাদি। ছয় বছর ধরে বানরের উপর একটি গবেষণা করা হয়। কিছু বানরকে ট্রান্সফ্যাট যুক্ত খাবার দেয়া হয় এবং কিছু বানরকে দেয়া হয় না।

গবেষণা শেষে দেখা যায় যাদেরকে প্রচুর ট্রান্সফ্যাট যুক্ত খাবার দেয়া হয়েছিল তাদের মধ্যে ভুঁড়ি বেড়ে গেছে ৩৩%। এছাড়াও ট্রান্সফ্যাট যুক্ত খাবার আরো বিভিন্ন রোগের সাথে কানেক্টেড যেমন - হার্টডিজিজ ইনফ্লামেশন ইত্যাদি।

স্ট্রেস আমাদের শরীরে করটিসল নামে এক ধরনের হরমোন নিঃসৃত করে। এই করটিসল হরমোন কে মাঝে মাঝে স্ট্রেস হরমনও বলা হয়। এই কলটিসল হরমোন পেটে চর্বি জমাতে সাহায্য করে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যাদের শরীরে বেশি পরিমাণে করটিসল নিঃসৃত হয় তাদের মধ্যে ক্ষুধার ভাবটাও বেশি হয় বা তারা প্রচুর ক্ষুধা অনুভব করে।

এবং একই সাথে করটিসল হরমন পেটে চর্বি যাওয়াতে সাহায্য করে। কিন্তু আমরা অনেকেই আছি যাদের প্রফেশনটাই হচ্ছে স্ট্রেসফুল। যার কারণে প্রত্যেকদিন বিভিন্ন স্ট্রেসের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। সে ক্ষেত্রে আপনারা যেটা করতে পারেন সেটা হল সপ্তাহে একদিন বা দুই দিন নিজেদের জন্য রাখতে পারেন।

পেটের চর্বি কমাতে চাইলে চিনি যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে চিনি যুক্ত খাবার পেটে চর্বি জমাতে সাহায্য করে। তাছাড়াও যারা অতিরিক্ত চিনি যুক্ত খাবার খায় তাদের জন্য বিভিন্ন ধরনের রোগের রিস্ক থাকে যেমন - ফ্যাটি লিভার ইনফ্লামেশন হার্ট ডিজিজ সুগার ইত্যাদি। এছাড়াও অনেক ধরনের সফট ড্রিংকস

যেমন - কোক সেভেন আপ স্প্রাইট ইত্যাদি এগুলো নরমাল মিষ্টি জাতীয় খাবারের চেয়েও বেশি খারাপ আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য। তার কারণ হলো আপনি যখন সফট ড্রিংকসগুলো খাচ্ছেন আপনি কিন্তু জানেন না আপনি কতটুকু মিষ্টি খাচ্ছেন। এইসব ড্রিংসের মধ্যে ফসফরাস এবং ফসফনিক এসিডের বিভিন্ন কম্বিনেশন থাকার কারণে আপনার জীহ্বা আসলে ওই মিষ্টি স্বাদটা পায়না।

যার ফলে হয় কি আপনি অনেক মিষ্টি খেয়ে ফেলেন কিন্তু আপনি বুঝতে পারেন না। আপনি যখন অন্যান্য মিষ্টি জাতীয় খাবার খান তখন খাবারটা চিবাচ্ছেন তারপর পেটে যাচ্ছে তারপরে হজম হচ্ছে। এরপরে মিষ্টিটা আপনার শরীরে লাগছে।

কিন্তু আপনি সফট ড্রিংকস খাচ্ছেন তখন সেটা সরাসরি লিকুইড অবস্থায় আছে। এ দুই প্রসেস কিন্তু আপনার ব্রেনে সিগনাল দেয় ডিফারেন্টলি। এদিক থেকে চিন্তা করলেও যখন আপনি পান করছেন তখন আসলে বেশি মিষ্টি খাওয়া হয়।

ঘুম কে আমরা অনেকেই গুরুত্ব সহকারে দেখিনা। কিন্তু ঘুম আমাদের স্বাস্থ্যের ওজনসহ আরো অনেক কিছুর সাথে সাথে সম্পৃক্ত। ৬৮ হাজার মহিলাদের ওপর একটি গবেষণা করা হয় এবং সেখানে ১২ বছর ধরে আফজার্ভ করা হয়। এ গবেষণায় দেখা হয় যারা প্রতিদিন ৭ ঘন্টা বা তার থেকে বেশি পরিমাণে ঘুমিয়েছেন তাদের মধ্যে কি পরিমান ওজন বেড়েছে।

যারা প্রতিদিন পাঁচ ঘন্টার কম ঘুমায় তাদের ওজন বেড়েছে গেছে। এই গবেষণার ফলে দেখা যায় যারা সাত ঘন্টা বা তার চেয়ে বেশি ঘুমিয়েছেন তাদের তুলনায় যারা পাঁচ ঘন্টার কম ঘুমিয়েছেন তাদের মধ্যে ওজন বেড়েছে সিগনিফিকেন্টলি বেশি।

সাদা কার্বোহাইড্রেট নিয়ন্ত্রণ বলতে সাদা ভাত সাদা রুটিকে বোঝায়। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যারা মোটা মানুষ তারা যদি প্রতিদিন ৫০ গ্রামের কম সাদা কার্বোহাইড্রেট খায় তাহলে তাদের পেটের চর্বির পরিমাণ কমে যায়।আবার যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের ক্ষেত্রেও ডায়াবেটিস কমেছে প্রতিদিন ৫০ গ্রামের কম সাদা কার্বোহাইড্রেট খাওয়ার ফলে।

এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে আপনি যদি সাদা ভাত বা সাদা রুটি না খান তাহলে আপনি খাবেন কি। তাহলে আপনি খেতে পারেন বাদামি কালারের যে সমস্ত খাবার সেগুলো। যেমন লাল চালের ভাত বা লাল আটার রুটি খেতে পারেন। আরও একটি গবেষণায় দেখা গেছে যারা সাদা ভাত সাদা রুটি খান তাদের তুলনায় যারা বাদামি কালারের ভাত বা রুটি খেয়েছেন তাদের পেটে চর্বি জমার যে প্রবণতা  কমে গেছে ১৭%।

আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া শাক-সবজি ফল ডাল ইত্যাদি এগুলো হলো আঁশযুক্ত খাবার। এই খাবারগুলো যখন পেটে যায় তখন পানি অথবা লিকুইড এডজার্ভ করে জ্বেল এর মত ফর্ম করে এবং পেট ভরা ভরা অনুভব হয়।

যার ফলে আপনি যতটুক খাবার এমনিতেই খেতেন তা থেকে অল্পতেই আপনার পেট ভরে যাবে এবং আপনি অতিরিক্ত ক্যালরি নিবেন না এবং এটা আপনাকে এমনিতেই ওজন কমাতে সাহায্য করবে। ১১০০ জন মানুষের উপরে করা এক গবেষণায় দেখা যায় প্রতি ১০ গ্রাম আঁশযুক্ত খাবার। 

তবে এটা খুবই ইফেক্টিভ একটা ব্যাপার যা আপনারা যারা সত্যিই পেটের চর্বি কমাতে চান এটা তাদের জন্য অবশ্যই ট্রাই করতে হবে। একটা গবেষণায় দেখা গেছে দৌড়ের সাথে ওয়েট লিফটের যদি কম্বিনেশন করা হয় সেটা হচ্ছে পেটের চর্বি কমানোর ক্ষেত্রে সবথেকে বেশি ইফেক্টিভ তাই পেটের চর্বি কমাতে এসব নিয়ম মেনে চলা উচিৎ ।

আমরা তলপেটের চর্বি বা ভুঁড়ি আমরা কেউই পছন্দ করি না তাইতো তলপেটের চর্বি বা ভুঁড়ি কমানো অনেক চেষ্টা করি। এছাড়াও গবেষণায় দেখা গেছে যাদের তলপেটে অতিরিক্ত চর্বি জমে থাকে তাদের ডায়াবেটিস বা হার্ট অ্যাটাক এর মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই অবশ্যই তলপেটে অতিরিক্ত চর্বি কমিয়ে ফেলতে হবে। এজন্য যে উপায় গুলো রয়েছে সেগুলো নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

প্রিয় পাঠক আপনি ওপরের আর্টিকেলের মাধ্যমে পেটের চর্বি কমানোর সহজ উপায় সম্পর্কিত অনেক তথ্যই জানতে পারলেন। তাই আশা করছি আর্টিকেলটি পড়ার পর আপনি উপকৃত হবেন এবং এর মাধ্যমে আপনার প্রিয়জনদের উপকৃত হতে সাহায্য করবেন।

আমাদের এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে কিংবা আপনার কোন উপকারে এসে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু, প্রিয়জন বা পরিচিত জনদের সাথে শেয়ার করবেন। আর্টিকেলটি পড়ে তারাও উপকৃত হতে পারে।

আপনার যদি আরোও কিছু জানার ইচ্ছে থাকে তাহলে কমেন্ট বক্সে লিখে জানাতে পারেন। এরকম আরো তথ্য জানতে এই লিংকে ক্লিক করুনআমরা চেষ্ট করবো সেগুলোর উত্তর দেওয়ার। আজ এই পর্যন্তই। সব সময় সুস্থ্য থাকবেন এবং ভালো থাকবেন।